ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম জানুন

 

ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম কি আপনার জানা আছে। বর্তমানে আধুনিক যুগে আমরা ইন্টারনেটের মাধ্যমে সব কিছু করে থাকি। একটা সময় মানুষ রেডিও টেলিভিশন ব্যবহার করতাম যা এই বর্তমান যুগে এসে দুর্লভ হয়ে গিয়েছে।কারণ এখন মানুষ আদি যুগে না পড়ে থেকে বর্তমান যুগের মোবাইলে  ইউটিউব দেখে।

মানুষ বিনোদন হিসেবে টেলিভিশন আগের যুগে যা কিছু চ্যালেনের মাধ্যমে সীমাবদ্ধ ছিল।তার বাইরে কিছু দেখার সম্ভব ছিল না। কিন্তু বর্তমান যুগে মোবাইলে ইউটিউব এর মাধ্যমে আপনি ইচ্ছে মতো ভিডিও দেখতে পারবেন। তাহলে চলুন জেনে নেই কিভাবে একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলতে হয় তার সম্পর্কে বিস্তারিত।

পেজ সূচিপত্রঃ ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম জানুন 

ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম 

ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম সম্পর্কে যদি আপনার না জানা থাকে এবং কিভাবে একটি প্রফেশনাল ইউটিউব চ্যানেল খুলতে হয় আপনি যদি না জানেন তাহলে অবশ্যই যানতে পারবেন কিভাবে একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলতে হয় তার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে আর্টিকেলটি ভালো ভাবে মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

ইউটিউব চ্যানেল খোলার জন্য আপনার একটি গুগল অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে, কারণ ইউটিউব গুগলের অধীনে কাজ করে।যদি ইতিমধ্যেই গুগল অ্যাকাউন্ট থাকে, তবে সেটি ব্যবহার করতে পারেন।না হলে গুগল অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন।আপনার গুগল অ্যাকাউন্ট দিয়ে ইউটিউবে সাইন ইন করুন।ইউটিউবে সাইন ইন করার পর, আপনার প্রোফাইল ছবির উপরে ক্লিক করুন।আপনার চ্যানেল অপশনে ক্লিক করুন।তারপর, চ্যানেল তৈরি করুন অপশনটি নির্বাচন করুন।

চ্যানেল নাম, ডিসক্রিপশন চ্যানেল সম্পর্কে তথ্য, এবং থাম্বনেইল চ্যানেল ইমেজ কাস্টমাইজ করুন।আপনার চ্যানেলের জন্য একটি পছন্দসই নাম নির্বাচন করুন যা দর্শকদের জন্য আকর্ষণীয় হবে।আপনার চ্যানেলের জন্য একটি কভার ছবি  এবং প্রোফাইল পিকচার আপলোড করুন।চ্যানেল তৈরি করার পর, ভিডিও আপলোড করতে "Create" বাটনে ক্লিক করে আপলোড ভিডিও অপশন নির্বাচন করুন।ভিডিওটি আপনার চ্যানেলে আপলোড করুন এবং সঠিক শিরোনাম, বর্ণনা, ট্যাগ ইত্যাদি দিন

চ্যানেলটির জন্য প্রাইভেসি সেটিংস, বিজ্ঞাপন মনিটাইজেসন অপশন এবং অন্যান্য সেটিংস কনফিগার করুন।আপনার ভিডিওগুলি সোশ্যাল মিডিয়া, ব্লগ, বা অন্যান্য প্ল্যাটফর্মে শেয়ার করুন যাতে বেশি দর্শক পেতে পারেন।

মোবাইল দিয়ে ইউটিউব একাউন্ট খোলার নিয়ম 

মোবাইল দিয়ে ইউটিউব একাউন্ট খোলার জন্য নিচের ধাপগুলি  হলো।ইউটিউব গুগল প্ল্যাটফর্মের অংশ হওয়ায়, ইউটিউব ব্যবহার করার জন্য একটি গুগল অ্যাকাউন্ট প্রয়োজন।আপনার মোবাইলে গুগল অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে করুন।আপনার গুগল অ্যাকাউন্টের লগইন তথ্য দিয়ে সাইন ইন করুন।যদি আপনার ফোনে ইউটিউব অ্যাপ না থাকে, তাহলে গুগল প্লে স্টোর বা অ্যাপ স্টোর থেকে ইউটিউব অ্যাপটি ডাউনলোড করুন।ইউটিউব অ্যাপ ওপেন করুন।

স্ক্রীনের উপরের ডানদিকে আপনার প্রোফাইল ছবি বা আইকনে ক্লিক করুন।সাইন ইন বাটনে ক্লিক করুন এবং আপনার গুগল অ্যাকাউন্ট দিয়ে সাইন ইন করুন।সাইন ইন করার পর, আবারও আপনার প্রোফাইল আইকনে ক্লিক করুন।সেখানে আপনার চ্যানেল অপশনটি দেখবেন, তাতে ক্লিক করুন।এবার চ্যানেল তৈরি করুন অপশনে ক্লিক করুন।আপনার চ্যানেল নাম দিন এবং চ্যানেলটি তৈরি করুন।

চ্যানেলের জন্য একটি প্রোফাইল পিকচার এবং কভার ছবি আপলোড করুন।চ্যানেল বর্ণনা দিন, যাতে দর্শক জানে আপনার চ্যানেলটি কী নিয়ে।চ্যানেল তৈরি হওয়ার পর, ভিডিও আপলোড করতে নিচে প্লাস আইকনে ক্লিক করুন।ভিডিও আপলোড করুন অপশন সিলেক্ট করুন এবং ভিডিওটি আপনার ফোন থেকে সিলেক্ট করে আপলোড করুন।আপনার চ্যানেলের প্রাইভেসি, বিজ্ঞাপন সেটিংস, নোটিফিকেশন ইত্যাদি কাস্টমাইজ করুন।এইসব সেটিংস আপনি চ্যানেল আইকনে ক্লিক করে সেটিংস থেকে পরিবর্তন করতে পারবেন।

ইউটিউব চ্যানেলের সেটিং গুলো  

ইউটিউব চ্যানেলের সেটিংস কাস্টমাইজ করার জন্য আপনি অনেকগুলো অপশন পাবেন, যা আপনার চ্যানেলের কার্যকারিতা এবং দর্শকদের অভিজ্ঞতা উন্নত করতে সাহায্য করবে। ইউটিউব চ্যানেলের সেটিংসের কিছু গুরুত্বপূর্ণ অংশ নিচে দেওয়া হলোঃচ্যানেলের নাম পরিবর্তন করতে পারবেন।আপনার চ্যানেলের সম্পর্কে বর্ণনা যুক্ত করতে পারবেন, যেমন আপনার চ্যানেল কিসের উপর ভিডিও তৈরি করে বা আপনি কিসে বিশেষজ্ঞ।

আপনি কোন দেশে বসবাস করছেন, তা নির্বাচন করুন।চ্যানেলের ভাষা সেট করুন।আপনার চ্যানেল থেকে সম্পর্কিত ভিডিও রেকমেন্ডেশন কাস্টমাইজ করুন।আপনার চ্যানেলের জন্য একটি প্রোফাইল পিকচার যেমন আপনার ছবি বা লোগো আপলোড করুন।চ্যানেলের জন্য একটি বড় কভার ছবি আপলোড করুন যা দর্শকদের আকর্ষণ করবে। সঠিক মাপের ছবি ব্যবহার করুন 2560 x 1440 পিক্সেল প্রস্তাবিত।

আপনি যদি চান, আপনার চ্যানেলের হোমপেজে অন্য চ্যানেলগুলি প্রদর্শন করতে পারেন।চ্যানেলের হোমপেজে আপনার ভিডিওগুলোকে বিভিন্ন সেকশনে সাজিয়ে রাখতে পারেন।নিয়মিত ভিডিও আপলোড করুন। ইউটিউব আপনাকে নতুন ভিডিও, মন্তব্য, লাইভ স্ট্রিমিং, এবং চ্যানেল আপডেটের জন্য নোটিফিকেশন পাঠায়। আপনি চাইলে এগুলি কাস্টমাইজ করতে পারবেন

আপনি ভিডিওগুলিকে Public, Privateবা Unlisted হিসেবে সেট করতে পারেন। Privateভিডিও শুধুমাত্র নির্দিষ্ট ব্যক্তি দেখতে পারবেন এবং Unlisted ভিডিওরা লিঙ্কের মাধ্যমে ভাগ করা যাবে কিন্তু সার্চ ইঞ্জিনে দেখা যাবে না।আপনার অ্যাকাউন্ট সুরক্ষিত রাখতে আপনি দুই-ধাপ যাচাইকরণ চালু করতে পারেন।ইউটিউবে অর্থ আয় করার জন্য আপনাকে একটি AdSense অ্যাকাউন্ট যোগ করতে হবে।

আপনি যদি ইউটিউব পার্টনার প্রোগ্রামে যোগ দিতে চান, তাহলে আপনার চ্যানেলকে কিছু শর্ত পূর্ণ করতে হবে যেমন ১০০০ সাবস্ক্রাইবার, ৪০০০ ঘণ্টা দেখা হয়েছে।আপনি চাইলে কমেন্টস মডারেট করতে পারেন। এর মাধ্যমে আপনি স্প্যাম কমেন্টস বা আপত্তিকর ভাষা পরিহার করতে পারবেন।আপনি আপনার চ্যানেলের জন্য অন্যান্য ইউজারদের অ্যাক্সেস প্রদান করতে পারেন। 

এর মাধ্যমে আপনার চ্যানেলের ভিডিও আপলোড বা চ্যানেল পরিচালনা করার জন্য আরও কিছু ব্যক্তি অনুমতি পেতে পারে।আপনার চ্যানেল কনফিগারেশন অনুযায়ী, আপনি কিছু এডভান্সড আইটেম যেমন চ্যানেল আইডি এবং অন্যান্য অপশন সেট করতে পারেন।  আপনি যদি লাইভ স্ট্রিমিং করতে চান, তবে সেটিংসে গিয়ে লাইভ স্ট্রিমিং অন করতে হবে।এইসব সেটিংস ব্যবহার করে আপনি আপনার ইউটিউব চ্যানেলটি আরও ব্যক্তিগত, কার্যকর এবং নিরাপদ করে তুলতে পারেন।

 ইউটিউব চ্যানেলটি কি ভাবে ভেরিফাই করবেন

ইউটিউব চ্যানেলটি ভেরিফাই করার জন্য আপনাকে কিছু নির্দিষ্ট ধাপ অনুসরণ করতে হবে। ইউটিউব চ্যানেল ভেরিফাই করার মাধ্যমে আপনি চ্যানেলটির বিশ্বাসযোগ্যতা নিশ্চিত করতে পারবেন এবং আপনার চ্যানেলের উপর কিছু এক্সট্রা সুবিধা পাবেন, যেমন কাস্টম  ভিডিও আপলোডের সীমা বৃদ্ধি, লাইভ স্ট্রিমিং, ইত্যাদি।প্রথমে আপনার গুগল অ্যাকাউন্টে সাইন ইন করুন, যেটি ইউটিউব চ্যানেল পরিচালনা করতে ব্যবহার করেন।উটিউব অ্যাপ বা ওয়েবসাইট ওপেন করুন এবং আপনার চ্যানেলে সাইন ইন করুন।

ইউটিউব পেজের উপরের ডানদিকে আপনার প্রোফাইল আইকনে ক্লিক করুন।সেখানে ইউটিউব স্টুডিও অপশনটিতে ক্লিক করুন।ইউটিউব স্টুডিওতে গিয়ে, বাম দিকে সেটিংস অপশনে ক্লিক করুন।চ্যানেল ট্যাবের নিচে স্ট্যাটাস এবং ফিচারস অপশনটি পাবেন, সেখানে ভেরিফাই অপশনটি থাকবে।ভেরিফিকেশন পেজে গিয়ে, আপনাকে একটি ফোন নম্বর প্রদান করতে হবে। ইউটিউব আপনাকে একটি কোড পাঠাবে যা আপনি সঠিকভাবে প্রবেশ করিয়ে ভেরিফাই করবেন।

ইউটিউব আপনার ফোনে একটি পিন কোড পাঠাবে। কোডটি সাবধানে প্রবেশ করান এবং সাবমিট ক্লিক করুন।কোড সঠিকভাবে প্রবেশ করলে, আপনার চ্যানেল ভেরিফাই হয়ে যাবে। আপনি তখন ইউটিউবের কিছু এক্সট্রা সুবিধা পাবেন, যেমন কাস্টম  সেট করা, ভিডিও আপলোডের সীমা বৃদ্ধি, লাইভ স্ট্রিমিং ইত্যাদি।ফোন নম্বরটি গুগল অ্যাকাউন্টে যুক্ত না থাকলে ইউটিউব চ্যানেল ভেরিফাই করা সম্ভব হবে না।যদি আপনি আগে থেকে।এভাবে আপনি সহজেই আপনার ইউটিউব চ্যানেলটি ভেরিফাই করতে পারবেন।

চ্যানেল খোলার কতদিন পর ইনকাম শুরু হবে   

ইউটিউব চ্যানেল থেকে আয় শুরু করার জন্য কিছু নির্দিষ্ট শর্ত পূর্ণ করতে হয়। এটি বিভিন্ন ফ্যাক্টরের ওপর নির্ভর করে, যেমন আপনার চ্যানেলের জনপ্রিয়তা, ভিডিওগুলির দর্শকসংখ্যা, এবং আপনি ইউটিউব পার্টনার প্রোগ্রামে যোগদান করেছেন কিনা।ইউটিউব চ্যানেল থেকে আয় শুরু করতে হলে আপনাকে যা করতে হবেঃ

  • ইউটিউব থেকে আয় করার জন্য আপনাকে ইউটিউব পার্টনার প্রোগ্রামে যোগদান করতে হবে। এর জন্য নিম্নলিখিত শর্তগুলো পূরণ করতে হবে।১,০০০ সাবস্ক্রাইবার,৪,০০০ ঘণ্টা ওয়াচ টাইম বিগত ১২ মাসে।একটি অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট যুক্ত করা আপনার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে।ইউটিউব পার্টনার প্রোগ্রামে যোগ দেওয়ার পর, আপনার ভিডিওতে বিজ্ঞাপন দেখানো শুরু হবে, এবং সেই অনুযায়ী আয় হতে থাকবে।
  • যদি আপনার চ্যানেল দ্রুত জনপ্রিয় হয় এবং দ্রুত শর্তগুলো পূর্ণ করতে পারেন, তবে আপনি 2-6 মাসের মধ্যে আয় শুরু করতে পারেন। তবে, কিছু চ্যানেলের জন্য এটি বছরের পর বছরও লেগে যেতে পারে, বিশেষত যদি তারা শুরুর দিকে খুব কম দর্শক বা সাবস্ক্রাইবার পায়।
  • ইউটিউবের মাধ্যমেই আপনি বিভিন্ন উপায়ে আয় করতে পারেন।এফিলিয়েট মার্কেটিং পণ্য বা সেবা প্রচারের মাধ্যমে কমিশন আয়।বিভিন্ন ব্র্যান্ড বা কোম্পানি আপনার ভিডিওতে পণ্য বা সেবা প্রচার করার জন্য আপনাকে স্পন্সরশিপ দিতে পারে।লাইভ স্ট্রিমিংয়ে দর্শকরা টাকা দিয়ে সুপার চ্যাট বা স্টিকার পাঠাতে পারে।

 ইউটিউব চ্যানেলের সাথে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট যুক্ত করা 

ইউটিউব চ্যানেলের সাথে আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট যুক্ত করা মূলত ইউটিউব থেকে আয়ের জন্য প্রয়োজনীয় একটি পদক্ষেপ। এটি করার মাধ্যমে আপনি আপনার ইউটিউব ইনকাম সরাসরি আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পেতে পারবেন। এই প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ করতে আপনাকে Google AdSense অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট সংযুক্ত করতে হবে।

  • আপনার ইউটিউব চ্যানেল থেকে আয় পেতে হলে, প্রথমে একটি এ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে। আপনি যদি ইতিমধ্যে এ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট তৈরি করে না থাকেন, তবে নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন।প্রথমে গুগল  এ্যাডসেন্স অন করতে হবে।আপনার গুগল অ্যাকাউন্ট দিয়ে সাইন ইন করুন।আপনার ইউটিউব চ্যানেলটি এ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্টের সাথে যুক্ত করুন।
  • একবার আপনার এ্যাডসেন্সঅ্যাকাউন্ট তৈরি হলে, আপনি আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টটি সংযুক্ত করতে পারবেন।এ্যাডসেন্সএ সাইন ইন করুন, এ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্টে সাইন ইন করুন।অ্যাকাউন্টের উপরের ডানদিকে আপনার প্রোফাইল আইকনে ক্লিক করুন এবং পেমেন্ট অপশনটি নির্বাচন করুন।পেমেন্ট মেথড যোগ করুন অপশনটি নির্বাচন করুন।এখান থেকে  ব্যাংক অ্যাকাউন্ট সিলেক্ট করুন।
  • আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য দিন (ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর, ব্যাংকের নাম, শাখা, এবং IFSC কোড অথবা SWIFT কোড, যা আপনার ব্যাংকের স্থানীয় শাখা থেকে পাওয়া যাবে।আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টের নাম এবং ঠিকানা সহ সঠিক তথ্য নিশ্চিত করুন।
  • আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য যাচাই করবে এবং কিছু সময়ের মধ্যে কিছু দিনে একটি পিন কোড পাঠাবে আপনার ঠিকানায়।পিন কোডটি সঠিকভাবে প্রবেশ করানোর মাধ্যমে আপনার অ্যাকাউন্ট নিশ্চিত হয়ে যাবে।
  • একবার আপনি আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট যুক্ত এবং যাচাই সম্পন্ন করলে, ইউটিউব থেকে আপনার আয়ের পরিমাণ প্রতি মাসে আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তরিত হতে শুরু করবে।আপনার ইউটিউব ইনকাম এ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে প্রতি মাসের ২১ তারিখে প্রদত্ত সর্বনিম্ন অর্থের পরিমাণ পৌঁছানোর পর পরবর্তী মাসে আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়।সাধারণত আপনি যদি $100 বা তার বেশি আয় করেন, তবেই আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পেমেন্ট প্রক্রিয়া শুরু হবে।

 ইউটিউব চ্যানেল খুলতে কত টাকা লাগে

ইউটিউব চ্যানেল খোলার জন্য কোনো খরচ লাগে না। ইউটিউব চ্যানেল খুলতে সম্পূর্ণ ফ্রি। আপনাকে শুধু একটি গুগল অ্যাকাউন্ট প্রয়োজন, যা দিয়ে আপনি ইউটিউবে সাইন ইন করে চ্যানেল তৈরি করতে পারেন।তবে, ইউটিউব চ্যানেল চালানোর জন্য কিছু আনুষঙ্গিক খরচ থাকতে পারে, যেমনঃ

  • ভিডিও আপলোড এবং স্ট্রিমিং করতে হলে একটি ভালো ইন্টারনেট সংযোগ প্রয়োজন। ইন্টারনেট বিল প্রতি মাসে আপনার খরচ হতে পারে।
  • ভালো মানের ভিডিওর জন্য ভালো ক্যামেরার প্রয়োজন হতে পারে যেমন স্মার্টফোন বা DSLR ক্যামেরা।ভালো অডিও রেকর্ডিংয়ের জন্য মাইক্রোফোন ব্যবহার করা হতে পারে।ভিডিও এডিটিং করার জন্য সফটওয়্যার কিনতে হতে পারে।
  • আপনি যদি আপনার চ্যানেলটি দ্রুত প্রসারিত করতে চান, তাহলে ইউটিউব বা অন্য সোশ্যাল মিডিয়াতে বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রচার করতে পারেন। তবে, এটি একেবারে অপশনাল এবং আপনার বাজেটের ওপর নির্ভর করবে।

 ইউটিউবে কি ধরনের ভিডিও বানাবেন

ইউটিউবে কনটেন্ট তৈরি করার জন্য অনেক ধরনের ভিডিও তৈরি করা যেতে পারে, এবং আপনি যেই ধরনের ভিডিও বানাতে চান তা আপনার রুচি, দক্ষতা এবং দর্শকদের আগ্রহের ওপর নির্ভর করে। তবে, কিছু সাধারণ ভিডিও কনটেন্ট আইডিয়া আছে যেগুলো জনপ্রিয় এবং দর্শকদের আকর্ষণ করতে সক্ষম। নিচে কিছু জনপ্রিয় এবং কার্যকর কনটেন্ট আইডিয়া দেওয়া হলোঃ

  • যদি আপনি কোন বিষয়ে দক্ষ হন যেমন, ভিডিও এডিটিং, ফটোগ্রাফি, সঙ্গীত, কোডিং ইত্যাদি, তাহলে আপনি শিক্ষামূলক ভিডিও তৈরি করতে পারেন। আপনি বিভিন্ন টপিকের উপর ধাপে ধাপে গাইড দিতে পারেন।
  • নিজের দৈনন্দিন জীবন বা কোনো বিশেষ ঘটনাগুলোর চিত্রণ করে আপনি ভ্লগ তৈরি করতে পারেন। এটি খুবই জনপ্রিয়, কারণ দর্শকরা প্রাকৃতিক এবং ব্যক্তিগত জীবন দেখতে পছন্দ করে।একদিনের ভ্লগ, ভ্রমণ ভ্লগ, রোড ট্রিপ ভ্লগ, বিশেষ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের ভ্লগ।
  • আপনি যদি নতুন গ্যাজেট, প্রযুক্তি, বা কোনো পণ্য ব্যবহার করে থাকেন, তাহলে তার রিভিউ দিতে পারেন। এটি দর্শকদের সাহায্য করতে পারে, যারা পণ্যটি কেনার আগে রিভিউ দেখতে চান।যেমন ল্যাপটপ কেনার জন্য সেরা গাইড,সেরা ক্যামেরা গ্যাজেট ২০২৫।
  • আপনি যদি গেমিং পছন্দ করেন, তবে গেম প্লে ভিডিও তৈরি করতে পারেন। লাইভ স্ট্রিমিং বা গেম রিভিউ, গেম টিপস ইত্যাদি বানাতে পারেন।PUBG বা Fortnite গেমপ্লে, মাইনক্রাফট চ্যালেঞ্জ, গেমিং টিপস ও ট্রিকস।
  • যদি আপনি ভ্রমণ পছন্দ করেন, তবে আপনি বিভিন্ন দেশ বা শহরের ভ্রমণ সম্পর্কিত ভিডিও তৈরি করতে পারেন। দর্শকরা নতুন স্থান আবিষ্কার করতে পছন্দ করে।বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর জায়গা, ভ্রমণ গাইড, ভ্রমণের খরচ কেমন হয়।

ইউটিউবে সফল হওয়ার উপায়

ইউটিউবে সফল হওয়া অনেক সময়ের ও পরিশ্রমের বিষয়, তবে কিছু কৌশল এবং সঠিক মনোভাব অনুসরণ করলে আপনি আপনার ইউটিউব চ্যানেলকে সফল করতে পারেন। নিচে ইউটিউবে সফল হওয়ার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপায় এবং টিপস দেওয়া হলোঃ

  • ইউটিউবে সফল হওয়ার জন্য প্রথমে আপনাকে একটি স্পষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে। আপনি কি ধরনের কনটেন্ট তৈরি করতে চান? কাকে আপনার টার্গেট অডিয়েন্স হিসেবে দেখছেন একটি বিস্তারিত পরিকল্পনা তৈরি করুন, যাতে আপনার কাজের পথ স্পষ্ট থাকে।আমি ভ্রমণ সম্পর্কিত ভিডিও বানাবো অথবা আমি প্রযুক্তি রিভিউ ও টিউটোরিয়াল দিবো ইত্যাদি।
  • ইউটিউবে সফল হওয়ার জন্য আপনাকে নিয়মিত কনটেন্ট আপলোড করতে হবে। নিয়মিত আপলোড করলে আপনার চ্যানেল অ্যাকটিভ থাকে এবং দর্শকরা আপনার কনটেন্টের অপেক্ষা করতে থাকে।এটি আপনার চ্যানেলের গ্রোথে সাহায্য করবে।সপ্তাহে অন্তত একটি বা দুটি ভিডিও আপলোড করার চেষ্টা করুন। তবে, ভিডিওগুলির গুণগত মান যেন কম না হয়, সেটি নিশ্চিত করুন।
  • আপনার ইউটিউব চ্যানেল এবং ভিডিওগুলো সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন। ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টুইটার, লিঙ্কডইন ইত্যাদি প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে আপনার ভিডিওর প্রচার করুন এবং দর্শকদের চ্যানেলে আসার জন্য উদ্বুদ্ধ করুন।আপনার ভিডিওর লিঙ্ক শেয়ার করার পাশাপাশি দর্শকদের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করুন এবং তাদের মন্তব্যের উত্তর দিন। এতে আপনার দর্শকবৃন্দ আরো বেশি সক্রিয় হবে।
  • আপনার দর্শকদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ করুন। তাদের মন্তব্যের উত্তর দিন, তাদের পরামর্শ শোনার চেষ্টা করুন এবং তাদেরকে ভিডিও সম্পর্কে আলোচনা করার জন্য উৎসাহিত করুন।আপনার ভিডিওতে সৃজনশীলভাবে প্রশ্ন করুন এবং দর্শকদের তাদের মতামত জানাতে উৎসাহিত করুন।
  • ইউটিউবে সফল হতে কিছু সময় প্রয়োজন। আপনার প্রথম ভিডিওগুলো হয়তো সেভাবে ভিউ পাবে না, তবে ধৈর্য্য ধরে কাজ করতে থাকুন এবং ধীরে ধীরে আপনার চ্যানেল সফল হবে।নির্দিষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করুন এবং সেই অনুযায়ী পরিকল্পনা করুন।নিয়মিত কনটেন্ট তৈরি করুন এবং সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন ব্যবহার করুন।দর্শকদের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করুন এবং তাদের প্রতিক্রিয়া ও মতামত গ্রহণ করুন।সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে আপনার চ্যানেল প্রচার করুন।ধৈর্য্য ধারণ করুন এবং আপনার কনটেন্টের গুণগত মান বজায় রাখুন।

 শেষ কথাঃ ইউটিউবে চ্যানেল খোলার নিয়ম জানুন

বর্তমানে আধুনিক যুগে আমরা ইন্টারনেটের মাধ্যমে সব কিছু করে থাকি। একটা সময় মানুষ রেডিও টেলিভিশন ব্যবহার করতাম যা এই বর্তমান যুগে এসে দুর্লভ হয়ে গিয়েছে।কারণ এখন মানুষ আদি যুগে না পড়ে থেকে বর্তমান যুগের মোবাইলে  ইউটিউব দেখে। কি ভাবে সঠিক নিয়মে একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলবেন তা উপরের অ্যাটিকেলটি ভালভাবে পড়ুন মনযোগ সহকারে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

জরিপ ৩৬৫ জুড়ে নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন ।প্রতিটি কমেন্ট রিভিও করা হয়

comment url